বিল গেটস এর স্মার্ট হোম এবং বাংলাদেশ

বিল গেটসের জানাডু ২.০ এবং আমাদের হাই-টেক স্মার্ট হোম সার্ভিস

বিল গেটসের বাড়ি, যা “জানাডু ২.০” নামে পরিচিত, আধুনিক স্মার্ট হোম প্রযুক্তির উৎকর্ষের উৎকৃষ্ট একটি উদাহরণ। ১৯৯৭ সালে নির্মিত এই বাড়িটি ওয়াশিংটনের মেডিনায় অবস্থিত এবং এর মূল্য প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলার।

জানাডু ২.০ স্মার্ট হোম এর বৈপ্লবিক প্রযুক্তি

অত্যাধুনিক অটোমেশন সিস্টেম

জানাডু ২.০ এর প্রতিটি রুমে অত্যাধুনিক টাচপ্যাড রয়েছে যা দিয়ে আলো, শব্দ এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই সিস্টেমটি সেই সময়ের স্মার্ট হোম প্রযুক্তির থেকে ২৫ বছর এগিয়ে ছিল। কল্পনা করুন, ১৯৯৭ সালে যখন আমাদের দেশে মোবাইল ফোনও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ছিল, তখন বিল গেটস তার বাড়িতে এমন একটি সিস্টেম তৈরি করেছিলেন যা আজকের আইফোনের মতো কাজ করত।

বাড়িটিতে একটি বিশাল সার্ভার সিস্টেম রয়েছে যা পুরো বাড়ির সমস্ত প্রযুক্তিগত কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। এটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে প্রতিটি অতিথি একটি বিশেষ পিন পায়, যা দিয়ে তারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী আলো, সঙ্গীত এবং তাপমাত্রা সেট করতে পারে।

জানাডু ২.০ এর মতো একটি সিস্টেম থাকলে আপনি শুধু একটি টাচ দিয়েই আপনার পুরো বাড়ির পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। গ্রীষ্মকালে ঘরে ঢোকার আগেই এয়ার কন্ডিশনার চালু করে রাখতে পারবেন, অথবা রাতে ঘুমানোর আগে সব আলো একসাথে বন্ধ করতে পারবেন।

অদৃশ্য প্রযুক্তি

বিল গেটসের বাসা যেন অদৃশ্য প্রযুক্তির জাদুকরী মিশ্রণ। বিল গেটস চেয়েছিলেন যে প্রযুক্তি “জাদুর মতো” কাজ করবে কিন্তু চোখে পড়বে না। এই দর্শনটি আজকের আইফোন বা স্যামসাং গ্যালাক্সি ফোনের ডিজাইনেও দেখা যায় – জটিল প্রযুক্তি, কিন্তু ব্যবহার করা অত্যন্ত সহজ।

জানাডু ২.০ তে এই অদৃশ্য প্রযুক্তির বাস্তবায়ন দেখলে আপনি অবাক হবেন। বাড়ির প্রতিটি ইলেকট্রিক্যাল আউটলেট পর্যন্ত লুকানো রয়েছে যাতে দেয়ালের সৌন্দর্য নষ্ট না হয়। আমাদের দেশের বাড়িগুলোতে সাধারণত সুইচ-বোর্ড আর তারগুলো দেখা যায়, কিন্তু এখানে সবকিছুই অদৃশ্য।

স্পিকারগুলো ওয়ালপেপারের পিছনে এমনভাবে লুকানো যে আপনি বুঝতেই পারবেন না শব্দ কোথা থেকে আসছে। এটি অনেকটা আমাদের গ্রামের বিভিন্ন মসজিদের আজানের মতো – শব্দ সবদিক থেকে আসে, কিন্তু উৎস দেখা যায় না।

মেঝেতে প্রেশার-সেনসিটিভ সিস্টেম রয়েছে যা বুঝতে পারে কে কোথায় হাঁটছে। এটি এতটাই সংবেদনশীল যে একটি শিশু আর একজন প্রাপ্তবয়স্কের পদচিহ্নের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বলতে গেলে, এটি এমন যেন আপনার বাড়ির মেঝেই জানে আপনি কখন ঘরে ঢুকেছেন এবং আপনার জন্য আলো জ্বালিয়ে দেয়।

বিপ্লবী ডিজিটাল আর্ট গ্যালারি

বাড়ির চারদিকে লক্ষ টাকা মূল্যের কম্পিউটার স্ক্রিন রয়েছে। আজকের LED TV এর দামও আমাদের দেশে অনেক বেশি, কিন্তু ১৯৯০ এর দশকে এই ধরনের স্ক্রিনের দাম ছিল আরও অনেক গুণ বেশি।

এই স্ক্রিনগুলোর বিশেষত্ব হলো যে কেউ একটি বোতাম টিপে তাদের পছন্দের শিল্পকর্ম বা ছবি দেখাতে পারে। কল্পনা করুন, আপনি যদি লালবাগের কেল্লার ছবি দেখতে চান, শুধু একটি বোতাম টিপলেই তা আপনার সামনে ভেসে উঠবে। অথবা আপনি যদি ঢাকার শাহীদ মিনারের ছবি দেখতে চান, সেটাও তৎক্ষণাত দেখতে পাবেন।

আরও চমৎকার বিষয় হলো, এই সিস্টেম প্রতিটি অতিথির পছন্দ মনে রাখে। আপনি যদি একবার আপনার প্রিয় শিল্পীর আঁকা ছবি দেখেন, পরের বার এলে সিস্টেম আপনাকে চিনে ফেলবে এবং আপনার পছন্দের ছবিগুলো দেখাবে।

বাংলাদেশের শিল্পপ্রেমীদের জন্য এটি হবে স্বর্গের মতো। আপনি চাইলে জয়নুল আবেদিনের শিল্পকর্ম থেকে শুরু করে বিশ্বের যেকোনো বিখ্যাত চিত্রশিল্পীর কাজ দেখতে পারবেন। এমনকি আপনার নিজের তোলা ছবি বা পারিবারিক স্মৃতিও প্রদর্শন করতে পারবেন।

ভবিষ্যতের প্রযুক্তি, আজকের বাস্তবতা

আজ আমরা যে স্মার্টফোন ব্যবহার করি, তার অনেক ফিচারই জানাডু ২.০ তে ১৯৯৭ সালেই ছিল। ভয়েস কমান্ড, অটোমেটিক লাইটিং, পার্সোনালাইজড এনভায়রনমেন্ট – এসব আজ আমাদের কাছে স্বাভাবিক মনে হয়, কিন্তু বিল গেটস এগুলো ব্যবহার করছিলেন যখন আমাদের দেশে ইন্টারনেটই সবার জানা ছিল না।

বর্তমানে বাংলাদেশে স্মার্ট হোম প্রযুক্তি আসতে শুরু করেছে। অনেক উচ্চবিত্ত পরিবার তাদের বাড়িতে অটোমেশন সিস্টেম ব্যবহার করছেন। কিন্তু জানাডু ২.০ এর মতো সম্পূর্ণ ইকোসিস্টেম এখনও বিরল।

এই বাড়িটি প্রমাণ করে যে প্রযুক্তি শুধু জীবনকে সহজ করে না, বরং একটি অভিজ্ঞতা তৈরি করে। আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্ম, যারা প্রযুক্তিপ্রেমী এবং উদ্যোক্তা হতে চায়, তাদের জন্য জানাডু ২.০ একটি প্রেরণার উৎস। এটি দেখায় যে কল্পনা আর দৃঢ় সংকল্প থাকলে ভবিষ্যৎ আজকেই তৈরি করা সম্ভব।

বিলাসবহুল সুবিধাসমূহ

অবিশ্বাস্য সুইমিং পুল

এটা বিশ্বাস করা কঠিন, কিন্তু বিল গেটসের সুইমিং পুলটি শুধু একটি সাধারণ পুল নয়! এই ৬০ ফুট দীর্ঘ এবং ১৭ ফুট চওড়া পুলটি একটি অদ্ভুত প্রযুক্তিগত বিস্ময়!

কী অবিশ্বাস্য ব্যাপার জানেন? এই পুলে একটি আন্ডারওয়াটার মিউজিক সিস্টেম রয়েছে! হ্যাঁ, আপনি সঠিক শুনেছেন – সাঁতারুরা পানির নিচে থাকা অবস্থায়ই তাদের প্রিয় গান শুনতে পারেন! এটা কি বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর মতো শোনাচ্ছে না?

আরও অবাক করা বিষয় হলো, এই পুলে একটি কাচের দেয়াল রয়েছে যার নিচে সাঁতার কেটে বাইরের টেরেসে যাওয়া যায়! মানে, পানির নিচ দিয়ে সুড়ঙ্গের মতো সাঁতার কেটে বাইরে বেরিয়ে আসা যায় – এটা তো একেবারে জেমস বন্ডের সিনেমার মতো!

এই পুলটি শুধু সাঁতারের জন্য নয়, এটি একটি সম্পূর্ণ বিনোদন কেন্দ্র। কল্পনা করুন, আপনি পানির নিচে সাঁতার কাটছেন আর একই সময়ে আপনার প্রিয় মোজার্ট বা বিটলসের গান শুনছেন! এটা কি অবিশ্বাস্য না?

মজার বিষয়টি জানেন কী? এই সিস্টেম ১৯৯৭ সালে তৈরি হয়েছিল – যখন আমরা এখনও ডায়াল-আপ ইন্টারনেট ব্যবহার করতাম! বিল গেটস তখনই ভবিষ্যতের প্রযুক্তি এনে ফেলেছিলেন তার বাড়িতে।

জিম এবং খেলার স্থান

বিল গেটসের বাড়িতে একটি পূর্ণাঙ্গ ২,৫০০ বর্গফুটের জিম রয়েছে যা অধিকাংশ বাণিজ্যিক জিমের চেয়েও বড়! কিন্তু সবচেয়ে অবাক করা বিষয়টি হলো – তার একটি সম্পূর্ণ ট্র্যাম্পোলিন রুম রয়েছে ২০ ফুট উঁচু ছাদ সহ!

এটা কি পাগলামি না? একটি পূর্ণাঙ্গ ট্র্যাম্পোলিন রুম! মানে, আপনি বাড়ির ভিতরেই লাফালাফি করে অ্যাক্রোব্যাটিক্স করতে পারবেন! এলেন ডিজেনারেসের শো-তে বিল গেটস নিজেই স্বীকার করেছেন যে “এটা একটু বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে কিন্তু আমার বাচ্চারা এটা ব্যবহার করে তাদের অতিরিক্ত শক্তি খরচ করতে পছন্দ করে”!

আরও চমকপ্রদ তথ্য জানতে চান? এই জিমে শুধু ট্র্যাম্পোলিন নয়, রয়েছে:

  • আলাদা পুরুষ ও মহিলাদের লকার রুম
  • সনা এবং স্টিম রুম
  • অত্যাধুনিক ব্যায়ামের সরঞ্জাম

সবচেয়ে মজার বিষয়টি কী জানেন? বিল গেটস একজন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি, কিন্তু তিনি তার বাচ্চাদের সাথে ট্র্যাম্পোলিনে লাফালাফি করেন! এটা প্রমাণ করে যে সব বয়সের মানুষই খেলাধুলা এবং মজা করতে পছন্দ করে।

কল্পনা করুন, আপনার নিজের বাড়িতে একটি ট্র্যাম্পোলিন রুম রয়েছে যেখানে আপনি যেকোনো সময় স্ট্রেস দূর করতে এবং ফিট থাকতে লাফালাফি করতে পারেন! এটা তো একেবারে শৈশবের স্বপ্নের মতো!

রান্নাঘর এবং বাথরুম

বিল গেটসের বাড়িতে মোট ছয়টি রান্নাঘর এবং ২৪টি বাথরুম রয়েছে! হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়েছেন – চব্বিশটি বাথরুম! এর মানে হলো যদি আপনি প্রতিদিন একটি আলাদা বাথরুম ব্যবহার করেন, তাহলে একটি মাসও শেষ হবে না!

এই ২৪টি বাথরুমের মধ্যে দশটিতে লাক্সারি বাথটাব রয়েছে! কল্পনা করুন, আপনার পছন্দের জায়গায় গিয়ে বাথটাবে শান্তিতে গোসল করার জন্য আপনার কাছে দশটি বিকল্প রয়েছে! একটি পরিবারের জন্য ছয়টি রান্নাঘর! এর পেছনে হয়তো কারণ হতে পারে:

  • বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরির জন্য আলাদা রান্নাঘর
  • অতিথিদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা
  • বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য ক্যাটারিং সুবিধা
  • শেফদের কাজের সুবিধার জন্য

একটি সাধারণ বাড়িতে যেখানে ২-৩টি বাথরুম থাকে, সেখানে বিল গেটসের বাড়িতে ২৪টি! এটা তো একটি ছোট হোটেলের সমান!

ডাইনিং রুম

বিল গেটসের বাড়িতে ১,০০০ বর্গফুটের একটি বিশাল ডাইনিং রুম রয়েছে যা ১৫০ জন মানুষের বসে খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে, অথবা ২০০ জন দাঁড়িয়ে থেকে পার্টি করতে পারে! এটা তো একটি বিশাল হলরুমের সমান!

কিন্তু আসল জাদু লুকিয়ে আছে প্রযুক্তিতে! এই ডাইনিং রুমে একটি অত্যাধুনিক স্মার্ট সিস্টেম রয়েছে যা আপনার খাবারের অভিজ্ঞতাকে একেবারে নতুন মাত্রায় নিয়ে যায়!

অবিশ্বাস্য টেকনোলজি ফিচারগুলো:

  • পার্সোনালাইজড পিন সিস্টেম: প্রতিটি অতিথি একটি ইলেকট্রনিক পিন পাবেন যাতে জিপিএস ট্র্যাকিং এবং তাদের ব্যক্তিগত পছন্দের তথ্য সংরক্ষিত থাকে
  • অটোমেটিক লাইটিং কন্ট্রোল: আপনি রুমে প্রবেশ করার সাথে সাথে আলো আপনার পছন্দ অনুযায়ী সেট হয়ে যাবে
  • স্মার্ট তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ: রুমের তাপমাত্রা স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার আরামের জন্য সামঞ্জস্য হবে
  • ইনভিজিবল সাউন্ড সিস্টেম: দেয়ালের ভিতরে লুকানো স্পিকার থেকে আপনার প্রিয় সঙ্গীত বাজবে

যখন আপনি ডাইনিং টেবিলে বসবেন, হাই-টেক সেন্সর সিস্টেম আপনাকে চিহ্নিত করে আপনার জন্য পারফেক্ট পরিবেশ তৈরি করবে! এটা তো বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর চেয়েও উন্নত!

কল্পনা করুন, আপনি খাবার খেতে বসলেন, আর সাথে সাথে আপনার পছন্দের মিউজিক বাজতে শুরু করল, লাইট পারফেক্ট হয়ে গেল, এবং তাপমাত্রা একদম আপনার মনের মতো! এটা তো রাজকীয় অভিজ্ঞতার চেয়েও বেশি কিছু!

প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য

বাড়ির কাছে একটি কৃত্রিম স্রোত রয়েছে যা প্রতি বছর সেন্ট লুসিয়া থেকে নিয়ে আসা বালি দিয়ে ভর্তি করা হয়। বিল গেটসের বাড়িতে শুধু একটি কৃত্রিম স্রোত নয়, এটি একটি সম্পূর্ণ হাই-টেক প্রাকৃতিক ইকো-সিস্টেম! এই কৃত্রিম স্রোত এবং ওয়েটল্যান্ড এস্টুয়ারি সিস্টেমে স্যামন এবং সি রান কাটথ্রোট ট্রাউট মাছ পূর্ণ করে রাখা হয়েছে!

সবচেয়ে বুদ্ধিমত্তার বিষয়টি হলো – এই কৃত্রিম স্রোতটি শুধু সৌন্দর্যের জন্য নয়! এটি তৈরি করা হয়েছে ফাউন্ডেশনের সমস্যা এবং রিটেইনিং ওয়ালের কারণে সৃষ্ট পানি নিষ্কাশনের সমস্যা সমাধানের জন্য। এটা তো ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রকৃতির এক অসাধারণ সমন্বয় – প্রযুক্তিগত সমাধান হিসেবে প্রকৃতির ব্যবহার!

বাড়িটির নিজস্ব বেলাভূমি রয়েছে যার বালি প্রতি বছর সেন্ট লুসিয়া থেকে বার্জ করে এনে সরবরাহ করা হয়! কল্পনা করুন, ক্যারিবিয়ান সাগরের বিলাসবহুল প্রাকৃতিক উপাদান বালি আমেরিকার ওয়াশিংটনে নিয়ে এসে একটি কৃত্রিম সমুদ্র সৈকত তৈরি করা হয়েছে! 

এই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ব্যবস্থাটি স্মার্ট প্রযুক্তি দিয়ে নিয়ন্ত্রিত! পানির স্রোত, মাছের খাবার, এবং ইকো-সিস্টেমের ভারসাম্য – সবকিছুই অত্যাধুনিক সেন্সর এবং অটোমেশন সিস্টেম দিয়ে পরিচালিত হয়। এ এক দারুন স্মার্ট প্রাকৃতিক ব্যবস্থাপনা।

বিল গেটস প্রমাণ করেছেন যে প্রযুক্তি প্রকৃতিকে ধ্বংস করে না, বরং এটি প্রকৃতিকে আরও সুন্দর এবং কার্যকর করে তুলতে পারে! একটি সমস্যা সমাধানের জন্য কৃত্রিম স্রোত তৈরি করা, আর সেই স্রোতে জীবন্ত মাছ রেখে একটি পূর্ণাঙ্গ ইকো-সিস্টেম তৈরি করা – এটা তো প্রকৃতি এবং প্রযুক্তির নিখুঁত সমন্বয়! তাই আমরা বলতেই পারি প্রকৃতি + প্রযুক্তি = ভবিষ্যতের জীবনযাত্রা। এই ব্যবস্থা প্রমাণ করে যে স্মার্ট প্রযুক্তি শুধু ঘরের ভিতরেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি বাইরের প্রাকৃতিক পরিবেশকেও আরও উন্নত এবং টেকসই করে তুলতে পারে!

আধুনিক স্মার্ট হোমের পথপ্রদর্শক

যেসব প্রযুক্তি ১৯৯৫ সালে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল, তা এখন সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে এসেছে। বিল গেটসের বাড়ি আজকের স্মার্ট হোম প্রযুক্তির ভিত্তি তৈরি করেছে।

বিল গেটসের জানাডু ২.০ শুধুমাত্র একটি বাড়ি নয়, এটি প্রযুক্তি ও বিলাসিতার এক অনন্য সমন্বয়। এই বাড়িটি প্রমাণ করে যে কিভাবে উন্নত প্রযুক্তি দৈনন্দিন জীবনকে আরও আরামদায়ক ও দক্ষ করে তুলতে পারে।

আমাদের হাই-টেক স্মার্ট হোম সার্ভিস

আপনি হয়তো ভাবছেন যে এমন স্মার্ট হোম শুধু আমেরিকাতেই সম্ভব এবং শুধু বিল গেটসদের মতো মানুষরাই এগুলো উপভোগ করবে। না ভুল ভাবছেন। আমরা বিদেশি, পশ্চিমা, ইউরোপিয়ান, আমেরিকান এমনকি মধ্য প্রাচ্যেয় সকল হাই-টেক, এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) তথা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সহ বিভিন্ন প্রযুক্তি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের টিম গবেষণা ও কাজ শুরু করি। সেই যাত্রায় আজ আমরা সফল। আমরা আপনাকে উচ্চ প্রযুক্তির স্মার্ট হোম সেটআপ করে দিতে শতভাগ সমর্থ। 

🏠 কল্পনা করুন আপনার স্বপ্নের বাড়ি

আপনি ঘরে ঢুকলেই আলো আপনার পছন্দ অনুযায়ী জ্বলে উঠবে। এয়ার কন্ডিশনার নিখুঁত তাপমাত্রায় সেট হয়ে যাবে। আপনার প্রিয় সঙ্গীত মৃদু স্বরে বাজতে শুরু করবে। এটাই হলো স্মার্ট হোম – যেখানে প্রযুক্তি আপনার সেবায় নিয়োজিত! শুধু তাই না, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা আপনার বাড়ির ভেতরে ও বাইরে সব কিছু পর্যবেক্ষণ করবে আপনার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। চাইলেই কেও আপনার বাড়িতে চুরি করে ঢুকতে পারবে না। ডাকাত আসতে না আসতেই এলার্ট চলে যাবে সব জায়গায়। 

আমাদের বিশেষ সেবাসমূহ

স্মার্ট অটোমেশন সিস্টেম

  • ভয়েস কন্ট্রোল: বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় আপনার বাড়ি নিয়ন্ত্রণ করুন
  • মোবাইল অ্যাপ: যেকোনো জায়গা থেকে আপনার বাড়ি পরিচালনা করুন
  • টাচ প্যাড কন্ট্রোল: প্রতিটি রুমে আধুনিক টাচ সিস্টেম
  • এআই ভিত্তিক নিরাপত্তা মনিটরিং

স্মার্ট লাইটিং

  • অটো ডিমিং: দিনের সময় অনুযায়ী আলোর উজ্জ্বলতা
  • মুড লাইটিং: রোমান্টিক, পার্টি, পড়াশোনার জন্য আলাদা সেটিং
  • এনার্জি সেভিং: বিদ্যুৎ বিল ৪০% পর্যন্ত কমান

ক্লাইমেট কন্ট্রোল

  • স্মার্ট এসি: আপনার উপস্থিতি বুঝে নিজেই চালু/বন্ধ হবে
  • পারফেক্ট তাপমাত্রা: সারাদিন আপনার পছন্দের তাপমাত্রা বজায় রাখুন
  • এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং: বাতাসের মান নিয়ন্ত্রণে রাখুন

এন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেম

  • হোল-হাউস অডিও: সম্পূর্ণ বাড়িতে একসাথে সঙ্গীত
  • স্মার্ট টিভি ইন্টিগ্রেশন: ভয়েস দিয়ে চ্যানেল পরিবর্তন
  • সাউন্ড জোনিং: আলাদা রুমে আলাদা সঙ্গীত

নিরাপত্তা ব্যবস্থা

  • স্মার্ট ডোর লক: ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ফেস রিকগনিশন
  • CCTV সিস্টেম: মোবাইলে লাইভ দেখুন
  • মোশন ডিটেক্টর: সন্দেহজনক নড়াচড়ার সাথে সাথে সতর্কতা

কেন আমাদের বেছে নিবেন?

বাংলাদেশি কনটেক্সট অনুযায়ী ডিজাইন

  • লোডশেডিং সলিউশন: অটো জেনারেটর স্টার্ট/স্টপ
  • ডাস্ট প্রোটেকশন: ঢাকার ধুলো-ময়লার কথা মাথায় রেখে ডিজাইন
  • হিউমিডিটি কন্ট্রোল: বাংলাদেশের আর্দ্র আবহাওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা

আপনার বাজেট, আপনার পছন্দ

  • বেসিক প্যাকেজ: ৫০,০০০ টাকা থেকে শুরু
  • প্রিমিয়াম প্যাকেজ: ২,০০,০০০ – ৫,০০,০০০ টাকা
  • লাক্সারি প্যাকেজ: ১০,০০,০০০+ টাকা (বিল গেটস স্টাইল!)

সম্পূর্ণ সার্ভিস

  • ফ্রি কনসালটেশন: বিশেষজ্ঞ টিম আপনার বাড়ি পরিদর্শন
  • প্রফেশনাল ইনস্টলেশন: দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার টিম
  • ২৪/৭ সাপোর্ট: যেকোনো সমস্যায় তাৎক্ষণিক সমাধান
  • ১ বছর ওয়ারেন্টি: সম্পূর্ণ নিশ্চয়তা

📞 আজই যোগাযোগ করুন!

আগামীর বাড়ি, আজকেই!

বিল গেটসের মতো স্মার্ট হোম এখন আর স্বপ্ন নয়!
আমাদের সাথে যোগ দিন এবং বাংলাদেশে প্রযুক্তির নতুন যুগের সূচনা করুন।

স্মার্ট হোম = স্মার্ট জীবন!

বিশেষ দ্রষ্টব্য: আমাদের সকল প্রোডাক্ট বাংলাদেশের আবহাওয়া ও পরিবেশের জন্য বিশেষভাবে তৈরি। আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তি, দেশীয় সার্ভিস।

Categories

Tags

There’s no content to show here yet.